নেমচিপ এর ডোমেইন ব্লগার ওয়েবসাইটে অ্যাড করার নিয়ম

আজকাল কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করে আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটকে আরও পেশাদার এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে চান, তবে আপনি সঠিক জায়গায় আছেন। ব্লগার প্ল্যাটফর্মে নেমচিপ থেকে কেনা একটি ডোমেইন যুক্ত করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ, তবে এর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে একটি বিশেষ পরিচিতি এবং SEO ফ্রেন্ডলি উন্নতি পাওয়া সম্ভব।

এখানে আমরা আলোচনা করবো, কিভাবে আপনি নেমচিপের ডোমেইন ব্লগার ওয়েবসাইটে যুক্ত করবেন এবং এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার সাইটকে আরও কার্যকর এবং অনুসন্ধানযোগ্য করতে পারবেন। সহজ ভাষায় এই ধাপগুলো বুঝে ও প্রয়োগ করে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের পেশাদারিত্ব এবং ট্রাফিক বাড়াতে সহায়তা করতে পারবেন।

ডোমেইন ক্রয় করা

আপনার নতুন ওয়েবসাইট বা ব্লগ শুরু করার জন্য প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো একটি ডোমেইন নাম ক্রয় করা। ডোমেইন নামই হলো আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা বা পরিচিতি যা মানুষ ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করার সময় আপনার সাইটে প্রবেশ করতে ব্যবহার করবে। একটি সঠিক ও প্রফেশনাল ডোমেইন নাম আপনার ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ড মূল্য বাড়াতে সাহায্য করে এবং এটি SEO এর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

নেমচিপ (Namecheap) একটি বিশ্বস্ত ডোমেইন রেজিস্ট্রার, যেখানে আপনি সহজেই একটি পছন্দসই ডোমেইন নাম কিনতে পারেন। নেমচিপ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি স্বজ্ঞাত ইন্টারফেস প্রদান করে, যার মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার পছন্দের ডোমেইন নাম খুঁজে পেতে পারেন এবং এক ক্লিকে ক্রয় করতে পারেন।

এখন আসুন জানি, নেমচিপ থেকে ডোমেইন ক্রয়ের প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন করবেন।

১. একটি সেরা ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন

ডোমেইন ক্রয়ের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো একটি সঠিক নাম নির্বাচন করা। আপনার ডোমেইন নাম এমন কিছু হতে হবে যা:

• আপনার ব্যবসা বা ব্লগের উদ্দেশ্য এবং কনটেন্টের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
• সহজে মনে রাখা যায় এবং টাইপ করতেও সহজ হয়।
• SEO-friendly হওয়া উচিত, যেমন মূল কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করা।
• .com, .net, বা .org এর মতো সাধারণ টপ-লেভেল ডোমেইন (TLD) ব্যবহার করুন, যা বেশি জনপ্রিয় এবং বিশ্বাসযোগ্য।

২. নেমচিপে একাউন্ট তৈরি করুন

নেমচিপে ডোমেইন ক্রয়ের জন্য প্রথমে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করুন। একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে আপনার ইমেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। একাউন্ট তৈরি হলে, লগইন করুন।

৩. ডোমেইন নাম খুঁজুন

নেমচিপে লগইন করার পর, সার্চ বক্সে আপনার পছন্দের ডোমেইন নামটি টাইপ করুন। এটি খুঁজে দেখুন যে ডোমেইন নামটি উপলব্ধ আছে কি না। যদি ডোমেইন নামটি পূর্বে অন্য কেউ নিবন্ধন করে থাকে, তবে নেমচিপ আপনাকে অন্যান্য বিকল্প নামও প্রস্তাব করবে। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোনো নতুন নাম বেছে নিতে পারেন।

৪. ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন এবং কিনুন

যদি আপনার পছন্দের ডোমেইন নামটি উপলব্ধ থাকে, তবে তার পাশে থাকা "Add to Cart" বা "Buy Now" অপশনে ক্লিক করুন। তারপর, আপনি কত বছর পর্যন্ত ডোমেইনটি নিবন্ধন করতে চান তা নির্বাচন করুন (সাধারণত ১ বছরের জন্য শুরু করা হয়, তবে আপনি প্রয়োজন অনুসারে দীর্ঘমেয়াদী নিবন্ধনও করতে পারেন)।

৫. পেমেন্ট প্রক্রিয়া

ডোমেইন নাম ক্রয় করার পর, পেমেন্ট করতে হবে। নেমচিপ সাধারণত ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, PayPal, অথবা অন্যান্য পেমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করে। পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, ডোমেইন নাম আপনার একাউন্টে যুক্ত হয়ে যাবে।

৬. ডোমেইন সেটআপ এবং কনফিগারেশন

ডোমেইন ক্রয়ের পর, আপনি সেটি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। ব্লগার বা ওয়েবসাইটে ডোমেইন যুক্ত করার জন্য আপনাকে DNS রেকর্ড কনফিগার করতে হবে। নেমচিপের প্যানেলে গিয়ে DNS সেটিংসে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য সঠিক কনফিগারেশন করতে হবে, যেমন CNAME রেকর্ড এবং A রেকর্ড।

কেন নেমচিপ থেকে ডোমেইন ক্রয় করবেন?

• অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে: নেমচিপ সাধারণত খুবই কম দামে ডোমেইন বিক্রি করে, যা নতুন ওয়েবসাইট মালিকদের জন্য সুবিধাজনক।
• ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস: এটি একটি সহজ এবং স্পষ্ট ইন্টারফেস প্রদান করে, যার মাধ্যমে আপনি সহজে আপনার পছন্দের ডোমেইন নাম খুঁজে পেতে পারেন।
• বিশ্বস্ত এবং নিরাপদ: নেমচিপ একাধিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য প্রদান করে, যেমন SSL সার্টিফিকেট, যা আপনার ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।

ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করা

আপনি যদি ব্লগার প্ল্যাটফর্মে একটি পেশাদার ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালাতে চান, তবে কাস্টম ডোমেইন নাম ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পেশাদারিত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করে, সাথে সাথে SEO র‍্যাংকিংয়ের জন্যও সহায়ক। এই গাইডে, আমরা বিস্তারিতভাবে জানাবো কীভাবে আপনি ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করতে পারবেন, যা আপনি নেমচিপ থেকে কিনেছেন।

১. ব্লগারে লগইন করুন

প্রথমে ব্লগারের ড্যাশবোর্ডে লগইন করুন। যদি আপনি এখনও ব্লগ তৈরি না করে থাকেন, তবে প্রথমে ব্লগ তৈরি করে নিন।

২. ব্লগারের সেটিংস এ যান

• ব্লগের ড্যাশবোর্ড থেকে Settings অপশনে ক্লিক করুন।
• এরপর Basic সেকশনে যান।

৩. কাস্টম ডোমেইন সেট আপ করুন

• Publishing সেকশনে গিয়ে, + Set up a third-party URL for your blog অপশনটি দেখতে পাবেন। এখানে আপনি কাস্টম ডোমেইন নাম যুক্ত করতে পারবেন।
• এই জায়গায় আপনার নেমচিপ থেকে কেনা ডোমেইন নামটি লিখুন (যেমন: yourdomain.com)।
• এরপর, Save বাটনে ক্লিক করুন।

৪. নেমচিপের DNS সেটিংস কনফিগার করা

ডোমেইন নাম ব্লগারে সেট করতে হলে, আপনাকে নেমচিপের DNS রেকর্ডগুলো সঠিকভাবে কনফিগার করতে হবে। এটি করার জন্য, নেমচিপের প্যানেলে লগইন করুন এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

৪.১. CNAME রেকর্ড যোগ করুন

• নেমচিপ প্যানেলে লগইন করুন এবং আপনার ডোমেইনের পাশের Manage অপশন ক্লিক করুন।
• তারপর Advanced DNS ট্যাবে যান।
• CNAME রেকর্ড যোগ করুন:
• Host: www
• Value: ghs.google.com

৪.২. A রেকর্ড যোগ করুন

• একই প্যানেলে A রেকর্ড যোগ করুন:
• Host: @
• Value: Google এর IP ঠিকানা (যেমন: 216.239.32.21, 216.239.34.21, 216.239.36.21, 216.239.38.21)
• এই রেকর্ডগুলো ডোমেইন সেট করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিশ্চিত করুন, আপনি সঠিক IP অ্যাড্রেস ব্যবহার করছেন।

৪.৩. DNS রেকর্ড সংরক্ষণ করুন

• সব ডিএনএস রেকর্ড যোগ করার পর, Save Changes বাটনে ক্লিক করে সেগুলি সংরক্ষণ করুন।

৫. ব্লগারে ডোমেইন রিডিরেক্ট করা

• ব্লগারে ফিরে গিয়ে, Settings > Basic সেকশনে গিয়ে Redirect domain অপশনটি Yes করতে হবে।
• এটি করার মাধ্যমে, আপনার সাবডোমেইন (যেমন: yourblog.blogspot.com) স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাস্টম ডোমেইনে (যেমন: yourdomain.com) রিডাইরেক্ট হবে।

৬. প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং চেক করুন

সবকিছু সঠিকভাবে কনফিগার করার পর, কিছু সময় অপেক্ষা করুন (ডিএনএস আপডেট হতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে)। এরপর, আপনার ব্লগে গিয়ে চেক করুন। যদি সবকিছু সঠিকভাবে কাজ করে থাকে, তবে আপনার ব্লগ কাস্টম ডোমেইনে চলে আসবে।

কেন কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করবেন?

• বিশ্বাসযোগ্যতা: কাস্টম ডোমেইন আপনার ব্লগের পেশাদারিত্ব বাড়ায়।
• SEO উপকারিতা: কাস্টম ডোমেইন SEO র‍্যাংকিংয়ের জন্য উপকারী, কারণ এটি গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে আরও ভালভাবে ইনডেক্স হয়।
• ব্র্যান্ডিং: আপনার ব্লগের নামে একটি পেশাদার ডোমেইন নাম ব্যবহার করলে এটি আপনার ব্র্যান্ডিংকে শক্তিশালী করে তোলে।

ডিএনএস (DNS) রেকর্ড সেট করা

আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে কাস্টম ডোমেইন যুক্ত করতে হলে, ডোমেইন রেজিস্ট্রারের (যেমন নেমচিপ) DNS রেকর্ড সঠিকভাবে কনফিগার করতে হয়। DNS (Domain Name System) রেকর্ড হচ্ছে এমন এক ধরনের নির্দেশিকা যা ডোমেইন নামের সাথে ওয়েবসাইটের সঠিক অবস্থান (IP অ্যাড্রেস) সংযুক্ত করে, যাতে অনলাইনে আপনার সাইট খুঁজে পাওয়া যায়।

এখানে, নেমচিপের মাধ্যমে ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করার জন্য DNS রেকর্ড সেট করার পূর্ণ প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে:

১. নেমচিপে লগইন করুন

প্রথমে নেমচিপের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করুন। এরপর ডোমেইন ম্যানেজমেন্ট প্যানেলে যান।

২. DNS সেটিংসে প্রবেশ করুন

• একবার লগইন করার পর, আপনার ডোমেইন নামের পাশে থাকা Manage বাটনে ক্লিক করুন।
• এরপর Advanced DNS ট্যাবে যান, যেখানে আপনি ডোমেইনের DNS রেকর্ড কনফিগার করতে পারবেন।

৩. CNAME রেকর্ড যোগ করুন

ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন যুক্ত করতে হলে প্রথমে CNAME রেকর্ড যোগ করতে হবে:

• Host: www
• Value: ghs.google.com
• এই রেকর্ডের মাধ্যমে, আপনার ব্লগের www সাবডোমেইন গুগলের সার্ভারে রিডিরেক্ট হবে।

৪. A রেকর্ড যোগ করুন

এবার আপনাকে A রেকর্ড যোগ করতে হবে যাতে ব্লগারের মূল ডোমেইন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে:

• Host: @
• Value: 216.239.32.21
• Value: 216.239.34.21
• Value: 216.239.36.21
• Value: 216.239.38.21
• এই IP অ্যাড্রেসগুলো গুগলের সাইটের জন্য প্রযোজ্য। এই চারটি IP অ্যাড্রেস যোগ করতে হবে।

৫. DNS রেকর্ড সংরক্ষণ করুন

DNS রেকর্ডগুলো সঠিকভাবে যোগ করার পর, Save Changes বাটনে ক্লিক করে সেগুলি সংরক্ষণ করুন।

৬. ব্লগারে ডোমেইন সেটআপ করুন

• ব্লগারের ড্যাশবোর্ডে গিয়ে Settings > Basic সেকশনে যান।
• সেখানে Publishing এর অধীনে + Set up a third-party URL for your blog অপশনটি পাবেন। এখানে আপনার কাস্টম ডোমেইন নাম (যেমন: yourdomain.com) লিখুন এবং Save বাটনে ক্লিক করুন।

৭. রিডিরেক্ট সক্ষম করুন

• Redirect domain অপশনটি Yes করুন, যাতে আপনার ব্লগে সাবডোমেইন (যেমন: yourblog.blogspot.com) স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাস্টম ডোমেইনে (যেমন: yourdomain.com) রিডাইরেক্ট হয়।

কাস্টম ডোমেইন সেট করার পর কীভাবে চেক করবেন?

• DNS রেকর্ড আপডেট হতে কিছু সময় (২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত) লাগতে পারে।
• এরপর আপনার কাস্টম ডোমেইনটি ব্লগারে যুক্ত হয়ে গেলে, সাইটটি আপনার কাস্টম ডোমেইন নামের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য হবে।

কেন DNS রেকর্ড গুরুত্বপূর্ণ?

• DNS রেকর্ড আপনার ডোমেইন নামের সাথে ওয়েবসাইটের সঠিক ঠিকানা (IP অ্যাড্রেস) সংযুক্ত করে, যাতে ব্রাউজার বা সার্চ ইঞ্জিন সহজে আপনার সাইট খুঁজে পায়।
• সঠিক DNS রেকর্ড সন্নিবেশ না করলে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট সঠিকভাবে কাজ করবে না।

ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন পেতে সেটিংস আপডেট করা

ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করা আপনার ব্লগের পেশাদারিত্ব এবং SEO র‍্যাংকিং উন্নত করতে সহায়ক। আপনি যদি নেমচিপ বা অন্য কোনো ডোমেইন রেজিস্ট্রার থেকে ডোমেইন কিনে থাকেন, তবে ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

১. ব্লগারে লগইন করুন

প্রথমে ব্লগারের ড্যাশবোর্ডে লগইন করুন এবং যেই ব্লগে কাস্টম ডোমেইন সেট করতে চান সেটি খুলুন।

২. ব্লগারের সেটিংসে যান

• ব্লগারের ড্যাশবোর্ড থেকে Settings অপশনে ক্লিক করুন।
• এরপর Basic সেকশনে যান।

৩. কাস্টম ডোমেইন সেট করুন

• Publishing সেকশনে গিয়ে + Set up a third-party URL for your blog অপশনটি দেখতে পাবেন। এখানে আপনার কাস্টম ডোমেইন নাম লিখুন, যেমন yourdomain.com।
• এরপর Save বাটনে ক্লিক করুন।

৪. ডোমেইনের DNS রেকর্ড কনফিগার করুন

এখন আপনাকে আপনার ডোমেইন রেজিস্ট্রার (যেমন: নেমচিপ) এর DNS রেকর্ড কনফিগার করতে হবে। এটি করতে, নেমচিপ প্যানেলে গিয়ে নিচের রেকর্ডগুলো যোগ করতে হবে:

৪.১. CNAME রেকর্ড যোগ করুন

• Host: www
• Value: ghs.google.com
• এই রেকর্ডটি ব্লগারকে নির্দেশ দেয় যে www.yourdomain.com ব্লগারের সার্ভারে রিডিরেক্ট হবে।

৪.২. A রেকর্ড যোগ করুন

• Host: @
• Value: 216.239.32.21
• Value: 216.239.34.21
• Value: 216.239.36.21
• Value: 216.239.38.21

এই A রেকর্ডগুলো আপনার ব্লগকে সঠিকভাবে গুগলের IP ঠিকানায় রিডিরেক্ট করবে।

৫. রিডিরেক্ট সক্ষম করুন

ব্লগারে ফিরে গিয়ে, Settings > Basic সেকশনে যান এবং Redirect domain অপশনটি Yes করুন। এর ফলে, যদি কেউ আপনার সাবডোমেইন (যেমন: yourblog.blogspot.com) ব্যবহার করে ব্লগে আসে, তবে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাস্টম ডোমেইনে (যেমন: yourdomain.com) রিডিরেক্ট করা হবে।

৬. ডোমেইন আপডেট হতে অপেক্ষা করুন

ডিএনএস রেকর্ড পরিবর্তন করার পর, সেটি পুরোপুরি কার্যকর হতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যে DNS সার্ভারগুলোর আপডেট হতে থাকে।

৭. চেক করুন

সবকিছু সঠিকভাবে কনফিগার করার পর, আপনার ব্লগটি কাস্টম ডোমেইনের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য হবে। আপনি ব্রাউজারে গিয়ে yourdomain.com টাইপ করে দেখতে পারেন যে ব্লগটি সঠিকভাবে লোড হচ্ছে কিনা।

কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করার উপকারিতা

• পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি: কাস্টম ডোমেইন নামের মাধ্যমে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট আরও পেশাদার এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়।
• SEO র‍্যাংকিং: কাস্টম ডোমেইন SEO র‍্যাংকিংয়ের জন্য সহায়ক, কারণ এটি গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে আরও ভালোভাবে ইনডেক্স হয়।
• ব্র্যান্ডিং: কাস্টম ডোমেইন আপনার ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ায় এবং সহজে মনে রাখা যায়।

এভাবে, আপনি ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সেট করতে পারবেন এবং আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটকে আরও পেশাদার ও SEO-friendly করতে সক্ষম হবেন।

আপডেট ও চেক করা

আপনি ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সঠিকভাবে যুক্ত করেছেন কিনা এবং সেটিংস আপডেট হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সংযুক্ত হয়েছে কিনা চেক করা

আপনি যখন ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন যুক্ত করবেন, তখন সেটির কার্যকারিতা চেক করতে হবে।

১.১. ব্লগের ড্যাশবোর্ডে যান

• ব্লগারের ড্যাশবোর্ডে লগইন করুন এবং আপনার ব্লগ নির্বাচন করুন।
• Settings > Basic সেকশনে যান।

১.২. কাস্টম ডোমেইনের স্ট্যাটাস চেক করুন

• Publishing সেকশনে গিয়ে, আপনি যদি কাস্টম ডোমেইন নামের পাশে "Verified" লেখা দেখতে পান, তাহলে আপনি সফলভাবে কাস্টম ডোমেইন সংযুক্ত করেছেন।
• যদি লেখা না থাকে বা কোনো ধরনের সমস্যা থাকে, তাহলে আপনার DNS রেকর্ড পুনরায় চেক করুন (যেমন: CNAME এবং A রেকর্ড).

২. DNS রেকর্ড সঠিকভাবে আপডেট হয়েছে কিনা চেক করা

কাস্টম ডোমেইন সেট করার পর, DNS রেকর্ড আপডেট হতে কিছু সময় (২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত) লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যে যদি ডোমেইন নামের রিডিরেক্ট না ঘটে বা সমস্যা দেখা দেয়, তবে আপনাকে DNS রেকর্ড ঠিকভাবে আপডেট করার জন্য পুনরায় চেক করতে হবে।

২.১. DNS চেক করার জন্য ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন

আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে DNS রেকর্ড চেক করতে পারেন, যেমন:

• https://www.whatsmydns.net/ - এখানে আপনি আপনার ডোমেইনের DNS রেকর্ড চেক করতে পারেন এবং দেখবেন CNAME এবং A রেকর্ড ঠিকভাবে আপডেট হয়েছে কিনা।

২.২. DNS রেকর্ড সঠিক কিনা যাচাই করা

• আপনার CNAME রেকর্ডের Host অবশ্যই www এবং Value হতে হবে ghs.google.com।
• আপনার A রেকর্ডে সঠিক IP ঠিকানা (216.239.32.21, 216.239.34.21, 216.239.36.21, 216.239.38.21) থাকতে হবে।

৩. ব্লগের URL চেক করা

ব্লগারের সাইটে গিয়ে, আপনার কাস্টম ডোমেইনটি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা নিশ্চিত করতে ব্রাউজারে এটি টাইপ করুন:

• উদাহরণস্বরূপ: www.yourdomain.com
• যদি সঠিকভাবে লোড হয়, তবে সেটআপ সফল হয়েছে।

৩.১. রিডিরেক্ট চেক করুন

ব্লগারে Redirect domain অপশন Yes করা হলে, আপনার ব্লগের সাবডোমেইন (যেমন: yourblog.blogspot.com) স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাস্টম ডোমেইনে (যেমন: yourdomain.com) রিডিরেক্ট হওয়া উচিত।

৪. সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনগুলি পরীক্ষা করুন

DNS রেকর্ড আপডেট হতে কিছু সময় লাগতে পারে, তাই যদি প্রথমবারে কাস্টম ডোমেইনটি কাজ না করে, তাহলে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং পুনরায় চেক করুন।

৫. সমস্যা সমাধান

যদি আপনার কাস্টম ডোমেইন কাজ না করে, তবে এই সমস্যাগুলোর কারণ হতে পারে:

• DNS রেকর্ড ভুল: CNAME বা A রেকর্ড ভুলভাবে সেট করা থাকতে পারে।
• ডোমেইন রেজিস্ট্রার সেটিংস: ডোমেইন রেজিস্ট্রার প্যানেলে কোনো ভুল বা অনুপস্থিত রেকর্ড থাকতে পারে।
• প্রতিরোধিত DNS ক্যাশিং: কিছু সময় DNS আপডেট না হওয়া পর্যন্ত ক্যাশ করা থাকে, তাই একটু সময় নিয়ে চেক করুন।

এইভাবে, আপনি ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন সফলভাবে আপডেট এবং চেক করতে পারবেন।

শেষকথাঃ উপসংহার

নেমচিপের ডোমেইন ব্লগারে যুক্ত করা একটি সহজ, তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা আপনার ব্লগের পেশাদারিত্ব এবং SEO র‍্যাংকিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্লগারের সেটিংস এবং DNS রেকর্ড সঠিকভাবে কনফিগার করার মাধ্যমে আপনি আপনার কাস্টম ডোমেইনটি সফলভাবে সেট করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ব্লগটি আরও নির্ভরযোগ্য ও ব্যবহারকারী বান্ধব হয়ে উঠবে, যা আপনার পাঠকদের কাছে একটি পেশাদার পরিচিতি প্রদান করবে। মনে রাখবেন, DNS রেকর্ড পরিবর্তন হওয়ার পর কিছু সময় (২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত) অপেক্ষা করা প্রয়োজন, যাতে সেগুলো সঠিকভাবে আপডেট হয়। এই প্রক্রিয়াটি একবার সম্পন্ন হলে, আপনি আপনার ব্লগে একটি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করে আরও সফলভাবে অনলাইন উপস্থিতি তৈরি করতে পারবেন।