জৈব সার তৈরির ঘরোয়া পদ্ধতি

Sabbir Space💲

12 May, 2025

বর্তমান সময়ে মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও বিষমুক্ত কৃষিপণ্য উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। কারণ রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে যেমন মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও পড়ছে মারাত্মক প্রভাব। তাই বিকল্প হিসেবে জৈব সার ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ঘরোয়া পরিবেশে অল্প খরচে সহজ উপায়ে জৈব সার তৈরি করা সম্ভব, যা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্যও বজায় রাখে।

এই আর্টিকেলে আমরা জানব কীভাবে সহজ উপায়ে ঘরে থাকা অপ্রয়োজনীয় জৈব উপাদান দিয়ে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক জৈব সার তৈরি করা যায় এবং এর উপকারিতা ও ব্যবহারের সঠিক নিয়ম।

জৈব সারের উপকারিতা

জৈব সার শুধু মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিই করে না, বরং গাছ, মাটি ও পরিবেশের জন্য বহুগুণ উপকারী। চলুন জেনে নিই জৈব সারের বিস্তৃত উপকারিতা—

মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে: জৈব সার মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়ায়। এটি মাটির গঠন উন্নত করে এবং শিকড়ের বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। ফলে ফসল ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।
পরিবেশবান্ধব ও বিষমুক্ত: রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ হয় না। এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ায় মাটিতে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক জমা থাকে না এবং পরিবেশ থাকে নিরাপদ।
মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ায়: জৈব সার মাটির মাটিকণার সাথে মিশে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে গাছ প্রয়োজনীয় সময় পর্যাপ্ত পানি পেয়ে সুস্থ থাকে।
গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: জৈব সার গাছের শিকড় ও দেহকে সবল করে। এতে গাছ সহজে রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হয় না এবং দুর্বল আবহাওয়ারও মোকাবিলা করতে পারে।
ফসলের স্বাদ ও গুণগত মান উন্নত করে: জৈব সার ব্যবহারে উৎপাদিত ফসল হয় সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর এবং বিষমুক্ত। সেই সঙ্গে ফসলের প্রাকৃতিক রং, গন্ধ ও পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।
মাটির জীবাণুর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে: জৈব সার মাটির উপকারী জীবাণু, কীট ও কীটপতঙ্গের বেঁচে থাকার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
খরচ কম এবং সহজলভ্য: জৈব সার সাধারণত রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া জৈব বর্জ্য, শুষ্ক পাতা ও গোবর থেকে তৈরি করা যায়। এতে বাড়তি খরচ নেই এবং সহজে পাওয়া যায়।
ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে: জৈব সার ব্যবহারে গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং বেশি ফুল-ফল দেয়। এতে ফসলের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
দীর্ঘস্থায়ী উপকার দেয়: জৈব সার একবার প্রয়োগ করলে তা দীর্ঘদিন ধরে মাটির উর্বরতা বজায় রাখে। রাসায়নিক সার দ্রুত কাজ করলেও ক্ষতিকর, অথচ জৈব সার ধীরে ধীরে কাজ করেও মাটির গুণাগুণ ধরে রাখে।
কম্পোস্ট ও ভার্মি কম্পোস্টের মাধ্যমে আরও কার্যকর: বিশেষ ধরনের জৈব সার যেমন কম্পোস্ট ও ভার্মি কম্পোস্ট মাটির গুণাগুণ আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এগুলো সহজে ঘরোয়া পরিবেশেও তৈরি করা যায়।

জৈব সার শুধু মাটির জন্যই নয়, বরং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব। যারা নিজেদের বাগানে বা ক্ষেতের ফসলে বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর ফলন পেতে চান, তাদের জন্য জৈব সারই হলো সেরা সমাধান।

জৈব সার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ

জৈব সার তৈরি করা খুবই সহজ এবং এতে প্রয়োজন হয় ঘরের আশপাশের সহজলভ্য কিছু প্রাকৃতিক উপাদান। নিচে জৈব সার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর তালিকা দেওয়া হলো —

রান্নাঘরের জৈব বর্জ্য: শাক-সবজির খোসা, ফলের খোসা, ডিমের খোসা, চায়ের পাতার অবশিষ্টাংশ, বাসি খাবার (বিষমুক্ত)।
শুকনো পাতা ও ঘাস: গাছের শুকনো পাতা, ঘাসের কাটাকুটি।
গবাদি পশুর গোবর: গোবর জৈব সারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং গাছের জন্য উপকারী পুষ্টি সরবরাহ করে।
নারিকেলের ছোবড়া ও ছিবড়া: নারিকেলের শুকনো ছোবড়া বা ছিবড়া মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং এটি সারে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়।
কাঠের ছাই: কাঠের ছাই পটাশিয়ামের ভালো উৎস। এটি গাছের জন্য উপকারী এবং জৈব সারের মধ্যে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়।
গাছের ডালপালা ও কাঠের গুড়ো: গাছের শুকনো ডালপালা বা ছোট কাঠের টুকরো কম্পোস্টে মিশিয়ে দিলে সারের গঠন ভালো হয়।
কাগজ ও কাগজের কাটাকুটি: পচনশীল পুরাতন কাগজ বা কার্ডবোর্ড সারের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
পানির ব্যবস্থা: সারের ভেজাভাব বজায় রাখতে মাঝেমধ্যে সামান্য পানি ছিটিয়ে দিতে হয়।
বড় ড্রাম বা গর্ত: সার রাখার জন্য বড় মাটির গর্ত, প্লাস্টিকের ড্রাম বা টব ব্যবহার করা যেতে পারে।

উপরের উপকরণগুলো খুব সহজেই আপনার বাড়ির আশপাশ থেকেই সংগ্রহ করা সম্ভব। এগুলো দিয়ে তৈরি করা জৈব সার গাছের জন্য হবে বিষমুক্ত, পরিবেশবান্ধব এবং পুষ্টিকর।

ধাপে ধাপে ঘরোয়া জৈব সার তৈরির নিয়ম

ঘরে থাকা অপ্রয়োজনীয় জৈব উপকরণ ব্যবহার করে খুব সহজেই জৈব সার তৈরি করা যায়। নিচে ধাপে ধাপে ঘরোয়া পদ্ধতিতে জৈব সার তৈরির নিয়ম তুলে ধরা হলো:

ধাপ ১: সারের জন্য জায়গা নির্বাচন: প্রথমে বাড়ির এক কোণে বা ছাদে একটি বড় ড্রাম, প্লাস্টিকের পাত্র অথবা মাটির গর্ত নির্ধারণ করুন। জায়গাটি ছায়াযুক্ত হলে ভালো।
ধাপ ২: উপকরণ সংগ্রহ: রান্নাঘরের জৈব বর্জ্য, শাক-সবজির খোসা, ডিমের খোসা, শুকনো পাতা, গোবর, কাঠের ছাই ইত্যাদি সংগ্রহ করুন। এগুলো ভালোভাবে আলাদা করে রাখুন।
ধাপ ৩: স্তর করে উপকরণ সাজানো: নির্বাচিত পাত্রের তলায় কিছু শুকনো পাতা ও খড় বিছিয়ে দিন। এরপর এক স্তর গোবর, এক স্তর রান্নাঘরের জৈব বর্জ্য, এক স্তর শুকনো পাতা এভাবে পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে রাখুন।
ধাপ ৪: সামান্য পানি ছিটিয়ে ভেজাভাব রাখা: প্রতিটি স্তরের পর সামান্য পানি ছিটিয়ে দিন। তবে অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না। শুধু ভেজা রাখার মতো পানি দিন।
ধাপ ৫: পাত্র ঢেকে দেওয়া: সব উপকরণ দিয়ে সাজানোর পর পাত্রটি ঢেকে দিন। তবে মাঝে মাঝে হালকা বাতাস প্রবেশের সুযোগ রাখুন, যাতে পচন ভালো হয়।
ধাপ ৬: মাঝে মাঝে নেড়ে দেওয়া: প্রতি ৫-৭ দিন পর পাত্রের ভেতরের উপকরণ ভালোভাবে নেড়ে দিন। এতে সব উপকরণ সমানভাবে পচবে এবং গ্যাস বেরিয়ে যাবে।
ধাপ ৭: সম্পূর্ণ পচে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা: এইভাবে প্রায় ৩০-৪৫ দিন রাখুন। উপকরণগুলো যখন কালচে রঙ ধারণ করবে এবং এক ধরনের মাটির গন্ধ হবে — তখন বুঝবেন জৈব সার তৈরি হয়ে গেছে।
ধাপ ৮: সার সংগ্রহ ও ব্যবহার: পচে যাওয়া সার ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে নিয়ে গাছের গোড়ায় ব্যবহার করুন। চাইলে ছাদবাগান, টব কিংবা ক্ষেতের ফসলেও ব্যবহার করা যাবে।

এই সহজ ঘরোয়া পদ্ধতিতে জৈব সার তৈরি করলে একদিকে যেমন বাড়ির বর্জ্য অপচয় হবে না, অন্যদিকে গাছও পাবে প্রাকৃতিক পুষ্টি। ফলে ফসল হবে বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর।

তৈরি জৈব সারের ব্যবহার

ঘরোয়া উপায়ে তৈরি জৈব সার গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানা থাকলে গাছের বৃদ্ধিতে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই তৈরি জৈব সারের সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি:

গাছ লাগানোর সময়: নতুন গাছ লাগানোর সময় গর্তের মাটির সাথে তৈরি জৈব সার মিশিয়ে দিন। এতে গাছ দ্রুত শিকড় ছড়াবে এবং সহজে বড় হবে।
গাছের গোড়ায় প্রয়োগ: ফুল, ফল, শাক-সবজি কিংবা যে কোনো গাছের গোড়ার চারপাশে তৈরি জৈব সার ছড়িয়ে দিন। এরপর হালকা পানি দিয়ে দিন। এতে গাছের পুষ্টি সরবরাহ হবে নিয়মিত।
ফল ও সবজি গাছে নিয়মিত প্রয়োগ: ফুল ও ফল গাছে প্রতি মাসে ১-২ বার করে জৈব সার প্রয়োগ করা উচিত। এতে ফলন বাড়ে, গাছ রোগমুক্ত থাকে এবং ফুল-ফল সুস্বাদু হয়।
ছাদবাগানে ব্যবহার: টবে লাগানো গাছের মাটির ওপরের অংশ আলগা করে ১-২ মুঠো জৈব সার ছড়িয়ে দিন। তারপর হালকা পানি দিয়ে দিন।
শাক-সবজি ক্ষেতের জন্য: শাক-সবজি চাষের জমিতে প্রতি ১৫-২০ দিন পরপর জৈব সার ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিন। এতে মাটির উর্বরতা বাড়বে এবং শাক-সবজির স্বাদ ও মান উন্নত হবে।
শুকনো বা পুরোনো গাছের জন্য: যেসব গাছ দুর্বল বা শুকিয়ে যাচ্ছে, তাদের গোড়ায় জৈব সার প্রয়োগ করে পানি দিন। এতে গাছ নতুন করে সতেজ হয়ে উঠবে।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

বেশি সার একবারে দেওয়া উচিত নয়।
প্রয়োগের পর হালকা পানি দিতে হবে।
সার সম্পূর্ণ পচা ও গন্ধহীন হলে ব্যবহার করতে হবে।

নিয়মিত ঘরোয়া জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ রোগবালাইমুক্ত, সুস্থ এবং অধিক ফলনশীল হয়। একই সঙ্গে মাটির স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। তাই বিষমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব কৃষি বা বাগান করতে চাইলে জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহী হওয়া প্রয়োজন।

জৈব সার ব্যবহারে সতর্কতা

যদিও জৈব সার গাছের জন্য খুবই উপকারী, তারপরও কিছু সতর্কতা মানা উচিত। কারণ ভুলভাবে সার ব্যবহার করলে গাছের ক্ষতি হতে পারে। নিচে জৈব সার ব্যবহারের সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার, তা তুলে ধরা হলো:

আধা-পচা সার ব্যবহার করবেন না: অর্ধেক পচা বা অর্ধেক শুকনো সার গাছের গোড়ায় দিলে তা গাছের শিকড় পুড়িয়ে দিতে পারে এবং গন্ধের জন্য পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়াতে পারে। তাই সম্পূর্ণ পচা, কালচে এবং গন্ধহীন সার ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত সার প্রয়োগ নয়: অনেক বেশি জৈব সার একবারে দিলে মাটির ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং গাছের বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিত সার দিন এবং প্রয়োজনে ১৫-২০ দিন পরপর অল্প করে ব্যবহার করুন।
গাছের গোড়ার একেবারে পাশে দেবেন না: জৈব সার সরাসরি গাছের গোড়ায় না দিয়ে চারপাশে ছিটিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। এতে গাছের শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
সময় বুঝে সার প্রয়োগ: বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি জমলে জৈব সার সহজে পচে যায় এবং মাটিতে গ্যাস তৈরি হতে পারে। তাই এই সময়ে সার প্রয়োগের পর ভালোভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন।
ব্যবহারের পর হাত ধুয়ে ফেলুন: জৈব সার ব্যবহারের পর ভালোভাবে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বিশেষ করে শিশুদের হাত লাগতে দেওয়া যাবে না।
পচনশীল বস্তু সাবধানে সংগ্রহ: কোনো রোগগ্রস্ত গাছের পাতা বা বাসি পচা খাবার, যা আগে পোকামাকড় বা ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলো সার তৈরির জন্য ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে রোগ বাগানে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

জৈব সার ব্যবহারে এই কয়েকটি সহজ সতর্কতা মেনে চললে গাছ হবে সুস্থ, ফলন হবে ভালো এবং বাগান থাকবে রোগমুক্ত। তাই সঠিকভাবে সার প্রয়োগ এবং পরিচর্যা করা খুবই জরুরি।

শেষকথাঃ উপসংহার

পরিবেশবান্ধব এবং বিষমুক্ত চাষাবাদের জন্য জৈব সারের বিকল্প নেই। ঘরোয়া উপায়ে সহজেই তৈরি করা যায় এমন প্রাকৃতিক সার, যা গাছের পুষ্টি যোগায় এবং মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া বর্জ্য, শুকনো পাতা ও গোবর ব্যবহার করে কম খরচে ঘরেই এই জৈব সার তৈরি সম্ভব।

নিয়মিত এই সার ব্যবহার করলে গাছ থাকবে সুস্থ, ফলন হবে বেশি এবং ফসল হবে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর ও বিষমুক্ত। তাই প্রকৃতিপ্রেমী ও স্বাস্থ্য সচেতন সকলের উচিত নিজের বাড়িতে জৈব সার তৈরি করা এবং সেটি বাগান কিংবা ফসলের জমিতে প্রয়োগ করা।

আপনারা চাইলে আজ থেকেই শুরু করতে পারেন এই সহজ পদ্ধতি। প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, মাটিকে বাঁচান এবং সুস্থ জীবন গড়ে তুলুন।