সকালে ওঠার সময় এই দোয়াটি পড়লে সারাদিন ভালো যায়

নামাজ না পড়লে যে ৭টি ক্ষতি হয় — জানলে শিউরে উঠবেন!প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময় সকালে ঘুম থেকে উঠেই নানা দুশ্চিন্তা, ক্লান্তি আর দায়িত্বের বোঝা নিয়ে দিন শুরু করি। অথচ ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, দিন শুরু করার সবচেয়ে সুন্দর ও বরকতময় উপায় হচ্ছে আল্লাহর নাম নিয়ে এবং একটি বিশেষ দোয়া পড়া। এই দোয়াটি শুধু আমাদের শোকর আদায়ের সুযোগই দেয় না, বরং পুরো দিনের জন্য শান্তি, সুরক্ষা ও বরকতের দরজা খুলে দেয়।

বিশেষ করে সকালে ওঠার সময় রাসূল (সা.) যে দোয়াটি পড়তেন, সেটি পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের দিনটিকে সহজ, কল্যাণময় ও শয়তানের কুমন্ত্রণামুক্ত রাখেন। আজকের এই লেখায় আমরা জানবো — সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর কোন দোয়াটি পড়তে হয়, এই দোয়া পড়ার উপকারিতা, এবং কীভাবে এটি আমাদের দিনকে সুন্দর ও সফল করে তুলতে পারে।

আপনি যদি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এই দোয়াটি পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার দিন কাটবে আরও বরকতময় ও প্রশান্তিময়। চলুন জেনে নিই সেই দোয়াটি এবং এর ফজিলত।

সকালে ওঠার পর যেটা পড়া সুন্নত

ইসলামে ঘুম থেকে ওঠার পর আল্লাহর শোকর আদায় করা ও একটি বিশেষ দোয়া পড়া সুন্নত। রাসূল (সা.) ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সাথে সাথে প্রথমে আল্লাহর নাম স্মরণ করতেন এবং এই দোয়াটি পাঠ করতেন —

দোয়া:

الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور

উচ্চারণ:

আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আহইয়ানাআ বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশূর।

অর্থ:

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের মৃত্যু (ঘুম) পরে জীবিত করলেন এবং তার দিকেই প্রত্যাবর্তন।

কেন এই দোয়া পড়া সুন্নত?

ঘুমকে ছোট এক ধরনের মৃত্যু বলা হয়। কারণ ঘুমের সময় আত্মা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। তাই ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা সুন্নত। এতে দিন শুরু হয় আল্লাহর স্মরণে এবং এতে বরকত নেমে আসে।

রাসূল (সা.) বলেছেন:

“যে ব্যক্তি ঘুম থেকে উঠে এই দোয়া পড়বে, তার দিন হবে বরকতময় এবং সে শয়তানের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকবে।”

(সহিহ বোখারি, হাদিস: ৬৩১২)

উপকারিতা:

• আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়।
• সারাদিনের জন্য মানসিক প্রশান্তি আসে।
• দিনটি কল্যাণময় ও বরকতময় হয়ে ওঠে।
• শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

তাই প্রতিদিন সকালে এই দোয়াটি পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং দিন শুরু করুন আল্লাহর স্মরণে।

আরো পড়ুনঃ গুনাহ মাফের জন্য সর্বোত্তম ৫টি দোয়া

এই দোয়া পড়লে কী উপকার হয়?

ঘুম থেকে ওঠার পর “الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور” এই দোয়াটি পড়লে শুধু আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায়ই হয় না, বরং এর রয়েছে অসংখ্য দুনিয়াবি ও আখিরাতের উপকারিতা। আসুন জেনে নিই এই দোয়া পড়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত ও উপকারিতা:

1. আল্লাহর শোকর আদায় হয়ঃ ঘুম থেকে উঠা মানে আবার নতুন জীবন পাওয়া। এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর দরবারে শোকর আদায় করি যে, তিনি আমাদের জীবিত রেখেছেন এবং নতুন একটা দিন উপহার দিয়েছেন।
2. সারাদিনের জন্য বরকত আসেঃ দিনের শুরু যদি আল্লাহর স্মরণে হয়, তাহলে সেই দিন আল্লাহর রহমত ও বরকতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। দোয়া পড়লে সারা দিন ভালো কাজে সময় যায় এবং খারাপ কিছু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
3. মানসিক প্রশান্তি ও সুস্থতা পাওয়া যায়ঃ দিনের শুরুতে এই দোয়া পড়লে মন ভালো থাকে, দুশ্চিন্তা কমে যায় এবং আত্মা শান্ত থাকে। এতে মানসিক শক্তি ও সুস্থতার অনুভূতি আসে।
4. শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়ঃ হাদিসে এসেছে, দিনের শুরুতে আল্লাহর নাম নিলে এবং এই দোয়া পড়লে শয়তান তার ধোঁকা দিতে পারে না। ফলে সারা দিন খারাপ কাজ ও চিন্তা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
5. মৃত্যু স্মরণ ও আখিরাতের প্রস্তুতি হয়ঃ এই দোয়াতে বলা হচ্ছে “ওই আল্লাহর কাছে ফিরে যাব”, এতে মৃত্যু ও আখিরাতের কথা মনে হয়। ফলে মানুষ দুনিয়ার মোহ ভুলে নেক আমলের দিকে মনোযোগ দেয়।
6. নেকি অর্জনের সুযোগঃ প্রতি সকালে এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে আমরা একটি সুন্নত আদায় করি এবং আল্লাহর কাছে নেকি লাভের সুযোগ পাই।

চাইলে আমি এই অংশটাকে আরও SEO-optimized সাবহেডিং দিয়ে সাজিয়ে দিতে পারব। কিংবা “এই দোয়া পড়লে কতটা দ্রুত ফল পাওয়া যায়” বা “দোয়া না পড়লে কী ক্ষতি হতে পারে” — এমন আরও সাবটপিক দিয়েও চাইলে বাড়িয়ে দিতে পারি। বলো শাব্বির, কীভাবে সাজাবো?

সকাল শুরু করার আরও কিছু করণীয়

একজন মুমিনের উচিত প্রতিদিন সকালটা এমনভাবে শুরু করা, যেন সারাদিন আল্লাহর রহমত ও কল্যাণে ভরে যায়। শুধু দোয়া পড়লেই নয়, বরং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যা করলে দিন হবে বরকতময় ও সফল। আসুন জেনে নিই সকাল শুরু করার আরও কিছু করণীয়:

1. বিসমিল্লাহ বলে ঘুম থেকে ওঠাঃ ঘুম থেকে ওঠার সময় বিসমিল্লাহ বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে শয়তান দূরে থাকে এবং ভালো কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।
2. দোয়া পড়াঃ ঘুম থেকে ওঠার পর সঙ্গে সঙ্গে এই দোয়াটি পড়া সুন্নত — “الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور” এতে সারাদিনের জন্য বরকত নেমে আসে।
3. মিসওয়াক করাঃ রাসূল (সা.) ঘুম থেকে উঠে মিসওয়াক করতেন। এতে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত পরিষ্কার থাকে এবং নেকি পাওয়া যায়।
4. ওযু করে ২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করাঃ সকালে উঠেই ওযু করে দু'রাকাত নফল নামাজ আদায় করলে দিন শুরু হয় ইবাদতের মাধ্যমে এবং আল্লাহর রহমত লাভ হয়।
5. কুরআন তিলাওয়াত করাঃ সকালে অন্তত ৫-১০ আয়াত কুরআন তিলাওয়াত করলে মন শান্ত থাকে এবং দিন চলে বরকতের সঙ্গে।
6. দরুদ শরিফ পড়াঃ সকালেই কিছু সময় দরুদ শরিফ পড়লে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় এবং গুনাহ মাফ হয়।
7. সৎ নিয়ত করাঃ দিনের শুরুতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজ করার নিয়ত করলে, প্রতিটি ভালো কাজেই নেকি পাওয়া যায়।
8. ফজরের নামাজ আদায় করাঃ ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল। কারণ, ফজরের নামাজের বরকতে সারাদিন হেফাজতে থাকে এবং দুনিয়া-আখিরাতের কল্যাণ অর্জন হয়।

চাইলে এটাকে আরও ২-৩টি করণীয় যোগ করে বড় করেও দিতে পারব। বলো শাব্বির — বাড়াবো? না কি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মতো সাজিয়ে দেব?

আরো পড়ুনঃ ইসলামিক দৃষ্টিতে সফল জীবনের সংজ্ঞা: দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য পথনির্দেশ

দোয়াটি মনে রাখুন

ঘুম থেকে ওঠার পর এই দোয়াটি পড়া সুন্নত ও বরকতময়। আসুন, আমরা এই ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দোয়াটি একবার ভালো করে দেখে নেই —

আরবি:

الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور

উচ্চারণ:

আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আহইয়ানাআ বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশূর।

অর্থ:

সব প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য, যিনি আমাদের (ঘুমের) মৃত্যু পর জীবিত করলেন এবং তার দিকেই প্রত্যাবর্তন।

মনে রাখার সহজ কৌশল:

• সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় ৩ বার বলুন।
• ঘুমানোর আগে একবার মুখস্ত করে শুতে যান।
• মোবাইলের হোম স্ক্রিনে বা দেয়ালে লিখে রাখুন।
• পরিবারের সবাইকে শিখান — এতে দ্রুত মুখস্থ হবে।

এই দোয়াটি পড়ার মাধ্যমে দিন শুরু হবে আল্লাহর স্মরণে, আর পুরো দিন কাটবে বরকত ও শান্তিতে। ইনশাআল্লাহ।

শেষকথাঃ উপসংহার

প্রতিদিন সকাল শুরু করার সময় আল্লাহর স্মরণে একটি দোয়া পড়া আমাদের জীবনের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় ও বরকতময় — তা আমরা এই আলোচনায় জানতে পারলাম। বিশেষ করে “الحمد لله الذي أحيانا بعدما أماتنا وإليه النشور” দোয়াটি শুধু একটি দোয়া নয়, বরং এটি আমাদের জীবনের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের নিরাপত্তা, বরকত এবং মানসিক প্রশান্তির উৎস।

যারা এই দোয়াটি নিয়মিত পড়ে, তারা সারাদিনের কাজকর্মে আল্লাহর রহমত ও সাহায্য লাভ করে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিরাপদ থাকে। তাই আমাদের উচিত, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এই সুন্নত দোয়াটি পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।

আসুন, আমরা নিজেরা এই দোয়াটি শিখি, আমল করি এবং পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও সকলকে দোয়া পড়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর এই লেখাটি যদি ভালো লাগে, তাহলে শেয়ার করুন প্রিয়জনদের সাথে।